এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ :
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি বিলুপ্ত ঘোষনার পর মহানগর বিএনপি নিয়ে চলছে আলোচনার ঝড়।মহানগর বিএনপির কমিটি বিলুপ্তির ঘোষনা নাকি ঘোষনা আসবে নয়া মহানগর কমিটি এনিয়ে চলছে ব্যাপক পর্যালোচনা। জেলার মতো নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিরও নতুন কমিটি ঘোষনার গুঞ্জন চলছে সর্বমহলে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির আগামী কমিটিতে প্রবীণ ও নবীনদের সমন্বয়ে গঠন হলে দলে বিশৃঙ্খলা রোধ হবে বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক বোদ্ধারা।অতীতের মতো অভিভাবকহীন যেন না হয় কোন কমিটি এমনই প্রত্যাশা তৃণমূল নেতাকর্মীদেরও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আগামীতে বিএনপিকে আরো কঠিন সময় অতিক্রম করতে হবে।সামনে নির্বাচনের মৌসুম।এখন সময় দলকে আরো শক্তিশালী করা।কারন ক্ষমতায় বিএনপির এক রূপ আর ক্ষমতার বাইরে আরেক রূপ।
প্রসংগতঃ শুরুতেই গ্রুপিং ও বির্তক শুরু হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিকে নিয়ে।পদত্যাগ, বহিষ্কার, মারামারি,কর্মসূচিতে বিশৃঙ্খলা, পাল্টাপাল্টি হামলাসহ নানান প্রতিবন্ধকতা ও সমালোচনার মধ্যদিয়ে এগিয়ে যেতে হয় মহানগর বিএনপিকে।
মূলতঃ দলে অভিভাবক না থাকায় মহানগর বিএনপিতে অতীতের রেকর্ডকে হার মানায়।প্রবীণ বিএনপি নেতাদের অবমূল্যায়নে জেলা,মহানগর ও থানায় তরুণ নেতাদের হাতে চলে যায় বিএনপির নেতৃত্ব। অতীতে বিএনপির কমিটি গুলোতে মুরুব্বী শ্রেণির বিএনপির নেতৃত্বে ছিল বিধায় জুনিয়র নেতারা সহসা দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ পেতো না।
বর্তমানে তরুণ নেতাদের দখলে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতি।শহরে রয়েছে এক ঝাঁক তরুণ নেতা।এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে আরেক আলোচিত নেতা জাকির খানকে শুরু হয়েছে নয়া মেরুকরণ। মহানগর কমিটিতে সাখাওয়াত, খোরশেদ, টিপু- সজল,সেন্টু – আশা,আওলাদ এর নাম শোনা যাচ্ছে।এদিকে কারাবন্দী জাকির খানও পাচ্ছেন মহানগর বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদ।এমন চাউর বিএনপি শিবিরে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রিয় নেতারা জাকির খানের মুক্তির দাবী করে সভা সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন।যার কারনে মহানগর বিএনপিতে জাকির খানের স্থান পাওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দেয়া যায় না। নারায়ণগঞ্জ শহরে
এডভোকেট সাখাওয়াত, এডভোকেট টিপু,জাকির খান,কাউন্সিলর খোরশেদ,কাউন্সিলর শওকত,কাউন্সিলর আশা,কাউন্সিলর শাহেন শাহ,কাউন্সিলর ছক্কু,আনোয়ার হোসেন আনু,মাসুদ রানা,মনিরুল ইসলাম সজল,এডভোকেট আনোয়ার প্রধান। এরমধ্যে আলোচিত হচ্ছে কারাবন্দী সাবেক ছাত্রনেতা জাকির খানকে নিয়ে।
জেলার রূপগঞ্জে দিপু ভূইয়া,গোলাম ফারুক খোকন,আড়াইহাজারে নজরুল ইসলাম আজাদ,মাহমুদুর রহমান সুমন,সোনারগাঁয়ে আজহারুল ইসলাম মান্নান, ইমতিয়াজ বকুল,,মোশারফ,হাজী সেলিম হক,শাহ আলম মুকুল,সিদ্ধিরগঞ্জে অধ্যাপক মামুন, মাসুকুল ইসলাম রাজিব,আঃহাই রাজু,মমতাজ উদ্দিন মন্তুু,কাউন্সিলর সাদরিল,,জুয়েল প্রধান,সাগর প্রধান,ফতুল্লায়, সহিদুল ইসলাম টিটু,রিয়াদ চৌধুরী,জাহিদ হাসান রোজেল,এডভোকেট খন্দকার আক্তার হোসেন,রুহুল আমিন,এডভোকেট আলমগীর,সাদেকুর রহমান,আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন বিএনপির তরুণ নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ছে নারায়ণগঞ্জের বিএনপি। একমাত্র ভরসা অভিভাবক ছিলেন সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। সম্প্রতি জেলা বিএনপি বিলুপ্ত হওয়ায় একেবারে অভিভাবকহীন নারায়ণগঞ্জের বিএনপি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বর্তমানে বেহালদশা।ত্রিমুখী যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি।ক্রমশঃ অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ছে মহানগর বিএনপি।
বোদ্ধাদের মতে,তরুনদের হাতে নেতৃত্ব চলে যাওয়ার দলীয় কোন্দল প্রকট আকার ধারন করেছে। চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে মহানগর বিএনপিতে।
প্রবীণ বিএনপি নেতাদের মতে, প্রয়াত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আঃ মতিন চৌধুরী ছিলেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একমাত্র অভিভাবক। তাঁর মৃত্যুর নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রিয় বিএনপি নেতা মরহুম বদরুজ্জামান খসরু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, সাবেক,প্রয়াত এমপি কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম,সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর,সাবেক এমপি মুহাঃগিয়াস উদ্দিন, তৈমুর আলম খন্দকার, বিএনপি নেতা, কাজী মনিরুজ্জামান, মোঃ শাহ আলম,প্রয়াত বিএনপি নেতা হানিফ কবীর, প্রয়াত বিএনপি নেতা আতাহার হোসেন সামসু,প্রয়াত বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন,গাজী ঈসমাইন,মনিরুল ইসলাম রবি,
মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খান,আঃ মজিদ,,প্রয়াত বিএনপি নাজির হোসেন প্রধান, অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম,মুক্তিযোদ্ধা স,ম,নুরুল ইসলাম,রফি উদ্দিন রফিক,রফিক জামাল উদ্দিন কালু, জান্নাতুল ফেরদৌস,আনিসুল ইসলাম সানি,এটিএম কামাল, নুরুল ইসলাম সরদার,জাহাঙ্গীর কমিশনার,রফিক কমিশনার বিএনপির নেতৃত্ব দেয়াতে দলে ছিল না কোন বিশৃঙ্খলা। বিএনপির অংগ সংগঠন এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠনে তাদের ছিল না হস্তক্ষেপ। যার কারনে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হতো অংগ সংগঠন ও ওয়ার্ড কমিটি গুলো। দলের সিনিয়ন নেতাদের প্রতি জুনিয়র কয়েক নেতার শ্রদ্ধাবোধ ক্রমশঃ হ্রাস পাওয়ায় অনেক সিনিয়ন ও প্রবীণ নেতা বিএনপির রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।তরুনদের বেয়াদবির কারনে প্রায়শঃই নারায়নগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে কোন্দল ও বিশৃঙ্খলতা ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে।যার প্রতিফলন ঘটেছে মহানগর বিএনপির দ্বিমুখী থেকে ত্রিমুখী সংকটের মধ্য দিয়ে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত
সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও গোলাম ফারুক খোকন জেলা বিএনপির নেতৃত্বে থাকাকালীন সংগঠনটিতে তেমন কোন বিশৃঙ্খলার মতো ঘটনা ঘটেনি।কিন্তুু এডভোকেট সাখাওয়াত ও এডভোকেট টিপুর নেতৃত্বে মহানগর কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকেই চরম বিশৃঙ্খলা ও বির্তক সৃষ্টি হয়। এর একমাত্র কারন হিসেবে তরুন নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন প্রবীণ বিএনপি নেতারা।
দলের এই করুনঘনে নারায়নগঞ্জের বিএনপির ঐতিহ্যবাহী পরিবার গুলোকে নেতৃত্ব শূন্য করা হচ্ছে।ষড়যন্ত্রের রোষানলের পাশাপাশি বহিষ্কারও করা হচ্ছে।এতে মহানগর বিএনপি দুর্বল সংগঠনে রূপ নিচ্ছে। দলে অভিভাবক না থাকায় আজ মহানগর বিএনপির এ হাল।
সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালাম মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে থাকাকালীন অন্য কেউ মহানগরে কালো থাবা দিতে পারেনি।অতীতেও বাইরের কেউ মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনি।জনশ্রুতি রয়েছে,আড়াইহাজার বিএনপির এক নেতার ইশারায় পরিচালিত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও অংগ সংগঠন। নারায়ণগঞ্জের বিএনপিকে নিয়তন্ত্রে নিতে ব্যস্ত তিনি।রাজনৈতিক ডন হতে চাচ্ছেন ওই নেতা।এমন মন্তব্য প্রবীণ বিএনপি নেতাদের।
বিএনপির প্রবীণ এক রাজনীতিবিদ জানান,তরুন নেতৃত্বের কারনে সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি।
নারায়ণগঞ্জের বিএনপির প্রবীণ রাজনীতিবিদরা চায়,আগামী জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটিতে মুরুব্বীদের যেন প্রধান্য দেয়া হয়।মুরুব্বী বিহীন কমিটি গঠিত হলে আগের মতই অভিভাবক শূন্য হবে বিএনপি।তরুণরাই মানবে না তরুণদের।দলে দেখা দিবে চরম বিশৃঙ্খলা।