এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ :
দীর্ঘ ১৭ বছর পরে বেশ ঘটা করেই সম্পন্ন হলো নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশ। বিগত ১৭ বছর আওয়ামী শাসন আমলে নারায়ণগঞ্জের কোথাও এতো বড় সভা,সমাবেশ করতে দেখা যায়নি বিএনপির নেতাকর্মীদের। তবে গত ৫ আগষ্টের পরেই বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের সকল ইউনিটিরে নেতাকর্মীরা।
গত ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বাধীন কমিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তদন্তে বিএনপির কেন্দ্র থেকে করা হয় কমিটি। সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ছিল, অতি সত্ত্বর বিলুপ্ত এই কমিটি ঘোষণা করা হবে।
এর পরে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আংশিক কমিটিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি দেওয়া হয়।
আহবায়ক কমিটি পাওয়ার পরপরই তারা মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে প্রধান অতিথি করে নারায়ণগঞ্জে বিশাল সমাবেশের আয়োজন করেন। তবে ,এই সমাবেশের স্থান প্রধান সড়ক ও হাসপাতালের পাশে করায় শুরু থেকেই সৃষ্টি হয় নানা গুঞ্জনের। নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় পত্র-পত্রিকায়সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সমাবেশের স্থান নিয়ে নানারকম সংবাদ প্রচার হলেও টনক নড়েনি জেলা বিএনপির কোন নেতাকর্মীদের। এর আগে গত ২১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সম্মেলনে ঠিক একই ভাবে রাস্তা বন্ধ করে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে কর্মী সম্মেলন করা হয়েছিলো। তাদের ঐ সম্মেলনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে সৃষ্টি হয়েছিলো নানা আলোচনা ও সমালোচনা। এতোকিছুর পরেও সমাবেশের স্থান পরিবর্তন না করেই মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারী সারাদিন সমাবেশ করে জেলা বিনেপির নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারী দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়,নগরীর সলিমুল্লাহ সড়কের দক্ষিণ পাশ বন্ধ করে মঞ্চ তৈরি করে সমাবেশ করছে জেলা বিএনপি। এর ফলে উত্তর পাশের লেন দিয়ে দুই পাশের যান চলার করছিলো। কিন্তু তাও বেশিক্ষন চলাচল করতে পারেনি সমাবেশস্থলে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের মিছিলে উত্তর পাশের সড়কও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পুরো সড়কে সৃষ্টি হয় ভয়াবয় যানজট ভোগান্তিতে পরে হাজারো মানুষ।
সমাবেশেরে মিছিলে আটকে পড়া এক অ্যাম্বুল্যান্সের চালক জানায়, আমি প্রথমে গাড়ি নিয়ে উত্তর পাশের লেন দিয়ে যাওয়া শুরু করি অনেকক্ষন হর্ন বাজিয়ে সাইড না পেয়ে আমি রাস্তার মধ্যে রোগী নিয়ে বসে থাকি এই লেনে অন্যান্য গড়ি গুলো আমাকে সাইড দিলেও সড়কে থাকা মিছিলের জন্য আমি আটকা পড়ে যাই। গাড়ির ভিতরে আমার সিরিয়াস রোগী বলার পরেও তারা আমাকে সাইড না দিয়ে তাদের মিছিল নিয়ে সানের দিকে চলে যাচ্ছে।
দীর্ঘক্ষণ যানজটে বসে থাকা এক রিকশার যাত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জের খানপুর হাসপাতালের সড়ক, ও শহরের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক বন্ধ করে বিএনপি সমাবেশ অনুষ্ঠিত করে জনগণের কতটুকু উপকার করলেন বলতে পারেন? তাহলে আওয়ামীলিগ আর বিএনপির মধ্যে পার্থক্যটা রইলো কি? আগে কিছু থেকে কিছু হলেই শামীম ওসমান তার ক্ষমতা দেখানোর জন্য রাস্তা বন্ধ করে জনগকে ভোগান্তিতে গেলে সভা,সমাবেশ করতো এখন বিএনপি ক্ষমতায় আসার আগেই তাদের ক্ষপমতার জানান দিতে একই কাজ করে যাচ্ছে এতে আমাদের মতো সারাধন জগনের ক্ষতি ছাড়া আর কিছু হচ্ছে বলে আমি মনে করিনা।
বিএনপির নেতাকর্মীদের এমন কর্মকান্ডে হতাশ নগরীর সচেতন মহলের মানুষেরা। তাদের দাবি যদি বিএনপি তাদের এমন কর্মকান্ড চলমান রাখে তাহলে দিনে দিনে মানুষ আওয়ামীলিগের মতো বিএনপির উপরও আস্থা হারাবে।