বাঁজার বন্ধী ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেটে
সাব্বির হোসেন
গতবছর মেয়ে বলেছিলো বাবা এই রমাজানে আমার জন্য বাঁজার থেকে বড় মাছ ও গরুর গোস্ত নিয়া আসবা আমরা সেহেরিতে সবাই এক সাথে খুব মজা করে খাবো। মেয়ের কথা শুনে হাসি মুখে বলেছিলাম মা আজকে ফেরার সময় তর জন্য বড় মাছ ও গরুর গোস্ত নিয়ে আসবো। ফেরার সময় বাঁজারে গিয়েছলাম ঠিকই তবে মেয়ের আবদার করা বড় মাছ ও গরুর গোস্ত কিনতে পারিনি! বাজারে জিনিসের যেই দাম আমাদের মতো গরিবের জন্য এই সব বড় মাছ ও গোস্ত কিনা সাধ্যের বাহিরে। সেদিন বাসায় ফিরে মেয়েকে কোনরকম বুজিয়ে বলেছিলাম পরের বছর কিনে দিবো তোমাকে। কিন্তু এই বছর বাঁজারের যে অবস্থা এই বছরও কপালে ভালো মন্দ জুটবে বলে মনে হচ্ছে না।ঠিক এইভাবেই মুখে ক্লান্তির ছাপ ও এক বুক হতাশা নিয়ে কথা গুলো বলছিলো হতদরিদ্র আবুল হাসেম।
আবুল হাসেম নারায়ণগঞ্জের গলাচিপা এলাকার বাসিন্দা। দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জনক তিনি। পেশায় একজন রিকশা চালক। সব বাবা মায়ের মতো আবুল কাশেমেরও স্বাদ আছে তবে সাধ্য নেই। আর পাঁচ দশজনের মতো আবুল কাশেমও চায় তার ছেলে,মেয়েদের ভালো মন্দ খাবার খায়াতে কিন্ত কি করার একজন রিকশা চালকের যে আয় তা দিয়ে আমাদের বর্তমান বাঁজারে ভালো মন্দ বাঁজার করা তাদের জন্য নেহাত বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নয়।
সারাবছর জুড়ে আমাদের দেশের বাঁজারগুলো বন্ধী থাকে এক জোরালো সিন্ডিকেটে। রমজান আসলেই যেন সেই সিন্ডিকেটগুলো আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। অন্যদিকে অন্যন্য দেশের বাঁজার গুলোতে পণ্যের দাম সিথিল করে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে এমন ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেটের জালে বন্ধী আমরা। দেশে আন্দোলন হলো,সরকার গেলো এলো নতুন সরকার শুধু রয়ে গেলো সেই পুরনো সিন্ডিকেটগুলো!
আমাদের আশে,পাশে এমন হজারো আবুল হাসেম রয়েছে যারা কিনা তাদের পরিবারের জন্য দিন শেষে নিজের কষ্টের অর্জিত আয় দিয়ে বাঁজার থেকে ভালো কিছু নিয়ে বাড়ি ফিরতে চায় কিন্তু এমন ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেটের কারণে তাদের বাড়ি ফিরতে হয় বাঁজারের সব থেকে কমদামী ও খাওয়ার অযোগ্য পণ্য গুলো নিয়ে।
যদি এমন সিন্ডিকেট আমরা না ভাঙ্গতে পারি তাহলে প্রতি বছরই আবুল হাশেমের মতো অনেক বাবাই তার পরিবারের জন্য তার স্বাদ থাকা সত্ত্বেও সাধ্য অনুযায়ী বাঁজার নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেনা। পরিবারের সবাইকে নিয়ে সমাজের অন্য দশটা পরিবারের মতো সেহেরিতে ভালো মন্দ খেতে পারবেনা।