এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ :
ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার প্রেক্ষাপটে তলবে হাজির হওয়ার পর ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তার দেশ।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী এবং শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের অভিন্ন আকাঙ্খা পূরণে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলবে এদিন বিকাল ৪টায় ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর দপ্তরে হাজির হন প্রণয় ভার্মা। আধা ঘণ্টার মাথায় মন্ত্রণালয় থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের বক্তব্য দেন তিনি।বাংলাদেশে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোমবার আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনের সামনে সভা ডেকেছিল হিন্দু সংঘার্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠন।
বিক্ষোভের ওই কর্মসূচি থেকে হামলা হয় বাংলাদেশ মিশনে। বিবিসি বাংলার খবরে বলা বলা হয়, বাইরে থাকা কিছু হিন্দু যুবক সে সময় হঠাৎ বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিড়ে ফেলে- ঘটনাস্থল থেকে এমন কিছু ভিডিওচিত্র পাওয়া গেছে। পরে হাই কমিশন কার্যালয়ের কিছু সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে ও আগুন লাগিয়ে দেয় তারা।
এ নিয়ে পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ার ঘটনা ‘গভীর দুঃখজনক’।
কোনো অবস্থাতেই কূটনৈতিক ও কনস্যুলার স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশন ও দেশের অন্যত্র উপ বা সহকারী হাই কমিশনগুলোর নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশও এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বক্তব্য দেয়। এ হামলার ঘটনাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ হিসেবে অভিহিত করে এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সব কূটনৈতিক মিশন ও সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারকে আহ্বান জানানো হয়।
একই সঙ্গে এ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ডেকে পাঠানো হয়।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসার পর প্রণয় ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভারতের জন্য ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক; যা ভারত সবসময় বলে আসছে।
এটা খুবই বিস্তৃত সম্পর্ক, বহুমুখী সম্পর্ক। এবং আমি যেমনটা বলেছি, আমরা এটাকে নির্দিষ্ট ইস্যু বা এজেন্ডার মধ্যে নামিয়ে আনতে পারি না।
তিনি বলেন, আমরা সত্যিকারভাবে সামনের পথচলায় ইতিবাচক, স্থিতিশীল ও গঠনমূলক সম্পর্ক তৈরি করতে চাই। অনেক কিছু আমরা করছি।
আমাদের অনেক ক্ষেত্রে পরস্পর নির্ভরশীলতা রয়েছে এবং আমরা এটির ওপর ভিত্তি করে পরস্পরের কল্যাণ করতে চাই। এবং আমরা এটা নিশ্চিত করব, আমাদের সহযোগিতা দুদেশের উপকার করছে।
অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সময়ে গত দুমাসে দুদেশের মধ্যে অনেক ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এক্ষেত্রে বাণিজ্য, নেপালের সঙ্গে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চালু এবং নিত্যপণ্যের সরবরাহের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, “সম্পর্কে গতিধারা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছি আমরা।