এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে পিরোজপুর ইউপির ৯নং ওয়ার্ডে একটি ৪তলা বিল্ডিং জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। এ-সময় বাড়ির লোকজনকে মারধর করে টেনে হিছড়ে বাইরে বের করে দেয়া হয়ছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী পরিবার।
রোববার (৫ জানয়ারী) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মমতাজ বেগম। এসময় তার স্বামী তমিজ উদ্দিন, ছেলে মাহবুব হোসেনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে সংবাদ সম্মেলনে মমতাজ বেগম বলেন, ২০০১ সালে তিনি তার জমিতে ৪তলা বিল্ডিং করে বসবাস করে আসছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও তার ছেলে যুবদল নেতা খাইরুল ইসলাম সজিবের নেতৃত্বে জুয়েল, রিপন,আলী নূর, খোরসেদ, বাবুসহ অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জন সন্ত্রাসী প্রথমে মমতাজ বেগমের ভাড়া বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। পরে ৬ আগস্ট ৪ তলা বিল্ডিংয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর লুটপাট চালায়। এবং মমতাজ বেগমসহ পরিবারের লোকজনদের মারধর করে টেনে হিছড়ে বের করে দিয়ে বাড়িটি দখলে নেয়। এছাড়া বাড়ির আম, জাম কাঁঠাল ও কাঠ গাছসহ প্রায় ৬০ থেকে ৭০টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নিয়ে যায়।এখানেই শেষ নয়, বাড়ির মেইন গেইট সংলগ্ন ভাড়া প্রদানকৃত ৩টি দোকান ভাংচুর করে উচ্ছেদ করে ৭ থেকে ৮ ফুট উঁচু দেয়াল নির্মান করে দেয়। এবং বাড়ির মেইন গেইটটি ইটের দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দিয়ে বিল্ডিংয়ের ভিতরের কেচিগেট সহ সকল রুমে তালা লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর প্রতিকার চেয়ে ১১ আগস্ট সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ১৮ আগস্ট সোনারগাঁ থানা এবং ২৩ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প বরাবর লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না তারা।
মমতাজ বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, এখন আমাদের বসবাসের কোন জায়গা নাই।পরিবার নিয়ে বাইরে অবস্থান করতে হচ্ছে। আমি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা,স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষপ কামনা করছি যাতে আমি তদন্তপূর্বক আমার বাড়ি ফিরে পাই।
মমতাজ বেগমের ছেলে ব্যবসায়ি মাহবুব হোসেন বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপি নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নান ও তার ছেলে যুবদল নেতা সজিব মেঘনা এলাকায় ব্যাপক দখল বাণিজ্য ও লুটপাট চালায়। তাদের আগ্রাসন থেকে আমরাও রক্ষা পাইনি। আমরা কোন রাজনীতি করি না। আজহারুল ইসলাম মান্নানের সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। আমরাও আতঙ্কের মধ্যে আছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মান্নানের যদি বৈধ কোন কাগজ থাকে তাহলে সেই কাগজ দেখাক। ২০০১ সালে আমরা যখন বাড়িটি নির্মাণ করি তখন বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। ওই সময় আহজাহরুল ইসলাম মান্নান উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিল। তখন তো তিনি তার জায়গা বলে দাবি করেননি। এখন ২৫ বছর পর বাড়ি দখল করে নিয়েছেন। আবার হুমকি দিয়ে বলেন, এখন আমার ক্ষমতা, যখন ক্ষমতা থাকবে না সেদিন বাড়ি ফেরত নিতে আইসো।
অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করতে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের ব্যক্তিগত মোবাইল (০১৭১৫৮৮৬০৭৭) নাম্বারে কয়েকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ না করে কেটে দিয়েছেন।