আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বৃহস্পতিবার, ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ ইং
  • ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
  • ৮ই রজব, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ১০:৪৯
পরিছন্ন নেতাদের দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি গঠনের দাবি রূপগঞ্জ বিএনপি’র

পরিছন্ন নেতাদের দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি গঠনের দাবি রূপগঞ্জ বিএনপি’র

mini-logo
প্রকাশিতঃ

এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ :

শিক্ষিত, যোগ্য, হামলা, মামলা, নির্যাতন, হয়রানির শিকার পরিচ্ছন্ন ও ক্লিন ইমেজের নেতাদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। অনৈতিক কর্মকান্ডে জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করার পর থেকে রূপগঞ্জ বিএনপি’র নেতাকর্মীরা এ দাবি জানিয়ে আসছে। কমিটি গঠনে অনিয়ম হলে আসন্ন নির্বাচনে জয় লাভ কষ্টসাধ্য হতে পারে। বিএনপির জেলা কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর মুখোরিত হয় উঠেছে পরিচ্ছন্ন নেতাদের অফিস, বাসা। সভা, সমাবেশ ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় উপস্থিতি বাড়ছে। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই এ দাবি জানিয়েছেন ।

জানা গেছে, ২০২৩সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে সভাপতি ও সাবেক যুবদল নেতা গোলাম ফারুক খোকনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়।

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটির বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ ওঠে। গত ৫আগষ্টের পর আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা চুত্ হওয়ার পর মামলা বাণিজ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিরুদ্ধে ৩১টি অভিযোগ জমা পড়ে। তখন চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন অপরাধীদের আশ্রয় ও রক্ষা করার অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। এ অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশে তদন্ত কমিটি করা হয়। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খানের নেতৃত্বে এ কমিটি হয়। অভিযোগের তদন্ত কমিটি যাচাই বাছাইয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তরে দায়িত্বে থাকা দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তদন্ত কমিটির প্রাপ্ত ফলাফল অভিযোগের ইতিবাচক থাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি বাতিলের সুপারিশের ভিত্তিতে বিএনপি এ সিদ্ধান্ত নেয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের অর্ন্তদ্বন্ধের প্রভাবে জেলা বিএনপিতে সাংগঠনিক স্থবিরতা দেখা দেয়। জুলাই-আগষ্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নামে চাঁদাবাজি, দখলবাজী ফ্যাসিস্ট সরকারের নেতাদের আশ্রয় প্রদান, ব্যক্তিগত শক্তি বৃদ্ধির লক্ষে আওয়ামী নেতামর্কীদের নিজ নিজ দলে আশ্রয় দেওয়া হয়। তাতে পরিচ্ছন্ন নেতারা কোনঠাসা হয়ে পড়ে।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি রিপন সরকার বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ১৬বছর নির্যাতিত ছিলাম। ৫আগষ্টের পরও আমরা নির্যাতিত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামী করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে সুস্থ্যধারার পরিচ্ছন্ন রাজনীতি চাই। পরিচ্ছন্ন, একনিষ্ঠ, দূরদিনের কর্মীকে নারায়ণগঞ্জের জেলা, মহানগর, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সর্বক্ষেত্রেই কমিটিতে অর্ন্তভুন্ত করা প্রয়োজন। অন্যথায় দল ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ কষ্টকর হবে।

রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব আকিব হাসান বলেন, আগে আওয়ামীলীগ ধারা নির্যাতিত নিপিড়িত হয়েছি। এখন হচ্ছি দলীয় কতিপয় নেতার নিয়োজিত সন্ত্রাসী দ্বারা। হামলা, মামলা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করতে গিয়ে ডিসেম্বর মাসে বেশকিছু দিন জেল খেটেছি।

স্ট্যান্ড দখল, গার্মেন্টেসের জুট নিয়ে মারামারি, ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলায় ফাঁসানো, আওয়ামীরীগের নেতাকর্মীদের পুনবার্সন করা এখন নৃত্য নৈমৃতিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কর্মকান্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০০৯সালের ২৫নভেম্বর শহরের আলী আহম্মেদ চুনকা পৌর মিলনায়তনে জেলা বিএনপির সম্মেলনে তৈমূর আলম খন্দকারকে সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জমানকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ২০১৭সালের ১ ফেব্রুয়ারী বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জমানকে সভাপতি ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মামুন মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়।

২০২০সালের ৩১ডিসেম্বর তৈমূর আলম খন্দকারকে আহবায়ক ও অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ২০২২সালের জানুয়ারি মাসে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করায় তৈমূর আলম খন্দকারকে আহবায়ক পদ থেকে সরিয়ে মনিরুল ইসলাম রবিকে ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক করা হয়।

পরে ২০২২সালের ১০নভেম্বর মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে আহবায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে নয় সদস্যের জেলা বিএনপির আহবায়ক গঠন করা হয়। ২০২৩সালে ১৭জুন সিদ্দিরগঞ্জের হীরাঝিল এলাকায় দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে কমিটি গঠন করা হয়। তখন থেকে তারা দুইজন জেলা বিএনপির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত এক দেড় বছরেও জেলা কমিটির এই দুইজনেরও বাইরে আর কাউকে অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি।

আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের বহু মামলায় আসামী করা হয়। এক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক নিস্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠে। এ কারনে বিএনপির সক্রিয় নেতাদের নিয়ে কমিটি গঠনের দাবি উঠেছে।

সোনারগাঁও উপজেলার বুরুমদী এলাকার বিএনপির কর্মী আবু বক্কর বলেন, জেলা কমিটির বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্য, দোকান দখল, ভূমি দখল, ব্যবসায়ী নেতাদের কাছে চাঁদা দাবি, ফুটপাতের চাঁদাবাজির ২৫টি অভিযোগ জমা পড়ে। জেলা কমিটির বাইরে অন্য কোন কমিটির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত হয়নি।

আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী এলাকার যুবদলের কর্মী সামসুউদ্দিন বলেন, নিজের দল ভারি, শক্তিশালী, ভীত মজমুত তৈরি করতে ত্যাগি ও পরিচ্ছন্ন নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ণ করা হয়। এবার যেন নিরীহ, শিক্ষিত, তরুণ, পরিচ্ছন্ন ও গ্রহনযোগ্য নেতা কর্মীদের মধ্যে থেকে বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের পদ পদবী নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তবেই দল সুসংগঠিত হবে।

সিদ্দিরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের কর্মী ও সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী আবির হাসান বলেন, সরকার পতনের পর বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকান্ডে সুবাতাশ বইলেও পরিচ্ছন্ন নেতাকর্মীরা আশঙ্কা ও হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে।

 

বন্দর এলাকার মহিলা দলের কর্মী আশ্রফুন্নেছা বেগম বলেন, দেশকে পুন:গঠন করে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিপ্লবী চেতনার মানুষ জেগে উঠছে। দীর্ঘদিনের বঞ্চিত দলীয় নেতাকর্মীরা পদ-পদবীর আশায় সক্রিয় হয়ে দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন। উদগ্রীব হয়ে উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। আদর্শ রাজনীতির চর্চা করতে চায় তারা। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে একত্রে করতে হবে। আসন্ন কমিটি হবে দেশ ও মানুষের কল্যণে। দলীয় নেতাকর্মীদের মূল্যায়ণ আর অন্যায়, অত্যাচার, জোর-জুলুম, ভাগাভাগি, স্ট্যান্ডবাজি থেকে দূরে থাকবে। ৩১দফা বাস্তবায়নে কাজ করবে।

কাঞ্চন পৌরসভা শ্রমিকদল কর্মী আরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতিতে ভোটের জন্য বিএনপির অনুকূলে থাকলেও ভোট সংগ্রহের জন্য নির্ভরযোগ্য, পরিশ্রমী গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব চাই। ভোট বা পরিবেশ অনুকূলের পাশাপশি পরিচ্ছন্ন নেতৃত্বই প্রয়োজন। নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠবে। তারা যেন হতাশ না হয়। কোন চাঁদাবাজ ব্যাক্তিকে ঘিরে বলয় যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতা আব্দুর রফিক বলেন, বিতর্কিত ব্যক্তিদের কমিটি থেকে বাদ দিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে অবদান রাখা এলাকার পরিচ্ছন্ন ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। চিহ্নিত অপরাধী, দুর্নীতিবাজ ও খাবার লোককে দলীয় পদ থেকে বাইরে রাখতে হবে।

শিক্ষিত আন্দোলনের অগ্রনায়ক, যোগ্য, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতাকর্মী যেন কমিটি থেকে বাদ না পড়ে। অসম্মান, অবমূল্যায়ণ, সময়হীনতা যেন না হয়। সুশিক্ষিক, পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান যেন নেতার দৃঢ় হয়।

একই পরিবারের কেউ ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থক, এমন দলীয় নেতাকর্মীদের যেন কমিটিতে গ্রহণ করা না হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপিত মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। দলের সিদ্ধান্ত কোনদিনই ভুল হয়নি। ভবিষ্যতেও ভুল হবে না।

এ সম্পর্কিত আরো খবর

জেলা বিএনপির নয়া কমিটি গঠনে ঘটতে পারে নয়া মেরুকরণ

  এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ : ১৫ জানুয়ারীর আগেই ঘোষনা আসছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নয়া কমিটি।এমনই গুঞ্জন জেলা জুড়ে।সদস্য সচিব/সাধারন সম্পাদক নাম প্রায়...

Read more

লন্ডনে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান তারেক ও জুবাইদা রহমান

এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ : উন্নত চিকিৎসা জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি স্থানীয় সময় বুধবার (০৮...

Read more

নারায়ণগঞ্জ মহানগর শিবিরের নতুন কমিটি, সভাপতি ইসমাইল সেক্রেটারি অমিত

    এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নারায়ণগঞ্জ মহানগরের নতুন সভাপতি পদে হাফেজ মো. ইসমাইল ও সাধারণ সম্পাদক পদে মো....

Read more
সম্পাদকঃ

কামরুল ইসলাম সোহেল

প্রকাশকঃ

আলহাজ্ব মোহাম্মদ সোহাগ

নিবদ্ধনঃ

এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪.কম সংবাদ মাধ্যমটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবদ্ধনের জন্য আবেদিত।

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ

৭৮ বঙ্গবন্ধু সড়ক, ফজর আলী ট্রেড সেন্টার(৬ষ্ট তলা)
নারায়ণগঞ্জ – ১৪০০
মীম শরৎ মিডিয়া
ফোনঃ 01711126588
ইমেইলঃ nganjnewsexpress24@gmail.com

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
Web Solution – Since 2009