এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ :
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ এবং ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণজমায়েত শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় এই গণজমায়েত শুরু হয়। বঙ্গভবনের দিকে যাত্রা করতে পারেন তারা। এমন অবস্থায় বঙ্গভবনের সামনে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ সদস্যরা।
সম্প্রতি মানবজমিনের প্রকাশনা জনতার চোখের প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে ‘নেপথ্যের গল্প’তে প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী জানান, রাষ্ট্রপতি তাকে জানিয়েছেন, তিনি শুনেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। এরপর গতকাল রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কারণ, গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সেই ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনারা জানেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।’ বিটিভিসহ দেশের ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমগুলোতে সেই ভাষণ সম্প্রচার হয়, যা এখনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বরাতে প্রকাশিত এমন বক্তব্যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক। সে সময় তারা বলেন, এ বিষয়ে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, রাষ্ট্রপতি যে দ্বিমুখী বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট যে তিনি শেখ হাসিনাকে বৈধতা দিতে চান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতির এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা অফিসিয়ালি দ্রুতই আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাব। আজ বিকেলেই দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাস এবং শহরে বিক্ষোভ হবে এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি আসবে।
এরপর রাতে গণজমায়েতের ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে থেকেও রাষ্ট্রপতির দাবি জানানো হয়।
আজ শহীদ মিনারের সমাবেশে সারজিস আলম বলেন, আবারও যদি প্রয়োজন হয়। আমরা আমাদের চোখ দিতে প্রস্তুত, পা দিতে প্রস্তুত, হাত দিতে প্রস্তুত, এমনকি জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। ফ্যাসিস্ট দল ছাত্রদল যেভাবে আমাদের ভাইয়েদের হত্যা করেছে, তাদের উত্থান সহ্য করা হবে না।
আব্দুল হান্নান বলেন, আমরা এই শহীদ মিনার থেকে আমাদের বিপ্লব শুরু করেছিলাম। সেই বিপ্লবের ভয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছিলেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা। আর এখন, আপনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে জনতার সঙ্গে প্রতারণা করছেন। কারণ, আপনি ৫ আগস্টে যা বলেছেন, তা এখন কার নির্দেশে ভুলে গিয়ে নতুন কথা বলছেন? আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই—খুনি হাসিনা যেভাবে পালিয়েছেন, চুপ্পুকেও পালাতে হবে। তিনি বলেন, দেশের প্রশ্নে, দশের প্রশ্নে বিপ্লবীরা সব সময় মাঠে আছে। ছাত্রলীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের হাতে এখনও তোদের হাতে লেগে আছে।ৃএই সপ্তাহ সময় দিলাম, এই সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হতে। তিনি আরও বলেন, এই বৃহস্পতিবারের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম দেন তিনি।
হান্নান বলেন, চুপ্পু সাহেব, আপনার সময় শেষ। ছাত্র জনতা আপনাকে আর দেখতে চাচ্ছে না।
মাহিন সরকার বলেন, চুপ্পু সাহেব দুই মাস বলছেন, তার কাছে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই। আমরা বলে দিতে চাই—পালিয়ে যাওয়া কারোর সঙ্গে পদত্যাগপত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। ছাত্রলীগের হাতে আবরারের রক্ত লেগে আছে। এই দল এদেশের মাঠিতে ঠাঁই নেই।