এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস২৪ :
নারায়নগঞ্জ সিটি করপোরেশন প্রধান হিসাব রক্ষক হেমায়েত হোসেন কি সকল কিছুর উর্দ্ধে। শুধুমাত্র ২ টি খাত হতে প্রায় ৬৭ কোটি টাকা আতœসাৎ করেও বহাল তবিয়তে। দূর্ণীতি দমন কমিশন নাসিক মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীসহ ৩ জনকে তলব করে প্রাথমিক অবস্থায় তাদের কার্যক্রম শুরু করলেও হেমায়েত হোসেন যেন ধরাছোয়ার বাহিরে। আবুল হোসেন নামের পরিস্কার পরিছন্ন কর্মকর্তা হলেও মেয়রের অনেকটা কাছের লোক পরিচয়ে বিশাল অর্থের মালিক বনে গেছে। আবুল হোসেনকে নগর ভবনের প্রধান অফিস থেকে অপসারন করে সিদ্ধিরগঞ্জ শাখা অফিসে দিয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত মাস্টারোল/ আউটসোসিং’র প্রায় ৩শ’ ৫০ জনের অধিক কর্মচারী তাদের ন্যায্য অধিকার দাবী করেও কোন সুফল পায়নি। বরং উল্টো চাকুরি হারানোর ভয়ে ৬ হাজার ৫শ’ টাকা মাসিক বেতন থেকে গত বছর খানিক ধরে ১০ হাজার টাকা বেতন দেয় বলে জানা গেছে। অথচ অর্থ মন্ত্রণালয় গত ১০/০৬/২০১৯ খ্রি:, তারিখের-০৭.১৫৩.০২৯.০৭.০০.০১.২০১৯.২৫৯ নম্বর পরিপত্র জারির মাধ্যমে আউটসোর্সিং সেবা মূল্য নির্ধারণ করেছে। আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেবা গ্রহণ নীতিমালা-২০১৮ এই নীতিমাল্য মোতাবেক আউটসোর্সিং চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হয়। সরকারে পরিপত্র জারি করে নির্ধারন করলেও কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রধান হিসাব রক্ষক হেমায়েত হোসেন। হিসাব রক্ষক হেমায়েত হোসেন শুধু এ খাত হতে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
এছাড়া করোনাকালীন সময়ে আউটসোসিং কর্মচারীদের জন্য বিশাল অংকের টাকা আসলেও তাদের ভাগ্যে জুটেছে ৪/ ৫ হাজার করে টাকা। অথচ ঢাকার একই পদের কর্মচারীরা লাখ থেকে দেড় লাখ করে টাকা পেয়েছে বলে জানা গেছে। তাহলে নাসিক কর্মচারীদের বাকি টাকা কোথায় এমনই প্রশ্ন সচেতন মহলের। নাসিককে দূর্ণীতিমুক্ত ও পরিছন্ন করতে দূর্ণীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসকসহ সেনাবাহিনীর জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বেতন ভাতা নির্ধারণ করা হয় কিভাবে?
মাস্টাররোল বা উন্নয়ন প্রকল্পের চাকরি কি স্থায়ী হয়?
মাস্টাররোল বা উন্নয়ন প্রকল্পের চাকরি কি স্থায়ী হয় এ বিষয় সরকারি পরিপত্রে মাধ্যমে জানা যায়, সমপর্যায়ের কর্মচারীদের মাসিক প্রান্তিক মূল বেতন, বাড়ি ভাড়া ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাৎসরিক দুটি উৎসব ভাতা ও নববর্ষ ভাতা যোগ করে মাসিক প্রাপ্যতা নির্ণয় পূর্বক প্রস্তাবিত মাসিক সেবামূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সে কারণে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত কর্মীগণ পৃথকভাবে উৎসব প্রণোদনা ও নববর্ষ প্রণোদনা প্রাপ্য হবেন না। আউটসোর্সিং মাসিক সেবা মূল্য ২০১৮ রিট বা মামলা করে কি এসব চাকরি রাজস্বখাতভূক্ত করা যায়?
রিট বা মামলা করে কি এসব চাকরি
রাজস্বখাতভূক্ত করা যায় না। কোন সুযোগ নাই। আপনি যেহেতু একটি কোম্পানির মাধ্যমে চাহিদা মোতাবেক নিয়োগ হচ্ছেন তাই একই সরকারি প্রতিষ্ঠানে কোম্পানি আপনাকে নাও রাখতে পারেন। কোম্পানি চাইলেই আপনাকে চাকরি হতে অপসারণ করতে পারেন অথবা অন্যত্র বদলি করে অন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত করতে পারেন। তাই মামলা বা রিটের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানের চাকরি স্থায়ী হবে না। অস্থায়ী লোকবল নিয়োগে আউটসোর্সিং নীতিমালার স্পষ্টীকরণ।
আউটসোর্সিং চাকরির কোন নিয়োগ নীতিমালা রয়েছে?
অর্থ মন্ত্রণালয় গত ১০/০৬/২০১৯ খ্রি: তারিখের-০৭.১৫৩.০২৯.০৭.০০.০১.২০১৯.২৫৯ নম্বর পরিপত্র জারির মাধ্যমে আউটসোর্সিং সেবা মূল্য নির্ধারণ করেছে। আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেবা গ্রহণ নীতিমালা-২০১৮ এই নীতিমাল্য মোতাবেক আউটসোর্সিং চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হয়।
মাস্টারোল বা উন্নয়ন প্রকল্পের চাকরি নিয়মিতকরণ বা রাজস্বখাতভূক্ত হতে পারে। কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে প্রকল্প মেয়াদ শেষে চাকরি স্থায়ীকরণ বা নিয়মিতকরণ বা রাজস্বখাতভূক্ত করবেন তা করতে পারেন। অন্যদিকে এসব চাকরি মামলা বা রীট করে রায় পেয়ে নিয়মিতকরণ হওয়ার নজির রয়েছে। একটি প্রকল্প দীর্ঘদিন চলার পর সরকারি যদি প্রকল্পটি একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠানের রূপ দেয় তবে ঐ সকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের চাকরি নিয়মিতকরণের মাধ্যমে রাজস্বখাতভূক্ত করা হয়। উন্নয়ন প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে নিয়মিতকরণের রায়!। এছাড়াও উন্নয়ন প্রকল্প হইতে রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরিত পদে পদধারীদের নিয়মিতকরণ ও জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ বিধিমালা, ২০০৫ কার্যকর থাকায় প্রকল্পে কর্মরতদের চাকরি নিয়মিতকরণ হচ্ছে কিন্তু আউটসোর্সিং হতে নিয়মিতকরণের কোন বিধিমালা নেই।
আউটসোর্সিং চাকরি কি?
আউটসোর্সিং তথা ফ্রিল্যান্সিং শব্দের মূল অর্থ হল মুক্ত পেশা। অর্থাৎ মুক্তভাবে কাজ করে আয় করার পেশা। আর একটু সহজ ভাবে বললে, ইন্টারনেটের ব্যাবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের কাজ করিয়ে নেয়। নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে এসব কাজ করানোকে আউটসোর্সিং বলে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের আউটসোর্সিং বলতে রাজস্বখাত, মাস্টাররোল, চুক্তিভিত্তিক চাকরির বাহিরে সম্পূর্ণ স্থায়ী ভাবে জনবল নিয়োগকেই বোঝায়।
আউটসোর্সিং চাকরি কি সরকারি হয়?
আউটসোর্সিং চাকরি সম্পূর্ণ অস্থায়ী চাকরি এবং যে কোন সময় কর্তৃপক্ষ চাকরি প্রত্যাহার বা চাকরি হতে অপসারণ করতে পারেন। এসব চাকরি সরকারি হয় না, এসব চাকরির নিয়োগ বিধিতে পরিস্কারভাবে উল্লেখ করা হয় যে, এটি সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। কোনকালেই এসব কর্মচারী চাকরি স্থায়ীকরণ বা রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তের আবেদন করতে পারবে না।
এদিকে কর্মচারীরা নগর ভবনের সামনে গত মাসে ২ দিন অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচী, স্বারকলিপি প্রদানের মাধ্যমের মূল কর্মচারীদের তোপের মুখে বেতন ১৫ হাজার ও ২ টি বোনাসের সিদ্ধান্ত নেই। অথচ ২০১৯ সালে ১০ জুন হতে সরকার প্রঙ্গাপন জারিসহ বেতন কাঠামো নির্ধারন করে দেয়। প্রায় ১৮ হাজার টাকা নির্ধারন করে দিলেও আন্দোলনের মুখে ১৫ হাজার টাকা নাসিক কর্তৃপক্ষ নির্ধারন করে। সরকারি নির্দেশের উপর কি তাদের সিদ্ধান্ত। নাসিক কর্তৃপক্ষ কর্মচারীদের বেতন কাঠামো নিজেদের ইচ্ছে মত নির্ধারন করে, যেখানে ২০১৯ সালের ১০ জুন থেকে সরকারিভাবে প্রঞ্জাপন জারি পূর্বক ৫ টি ক্যাটাগরিতে নির্ধারন করে দিয়েছে। সরকারের নির্দেশ বা কাঠামো নয়, তাদের নিজের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে সরকারি সিদ্ধান্তকে ডোন্ট কেয়ার। ২০১৯ সালের ১০ জুন হতে প্রায় ৫৩ মাসে ৩ শ’ ৫০ জন কর্মচারীর ১৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা কোথায় এমনই প্রশ্ন সচেতন মহলের। নাসিক প্রধান হিসাব রক্ষক হেমায়েত হোসেন প্রায় ২ টি খাত বেতন কাঠামো ও করোনাকালীন সহায়তার প্রায় ৬৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেও বহাল তবিয়তে। শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা ফিরিয়ে দেওয়াসহ হেমায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো তদন্ত সাপেক্ষে দুদক ও যৌথবাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।