এনগঞ্জনিউজঃ
নগরীর বেশকিছু স্থানে প্রকাশ্যে সড়কে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করছে কিছু মানুষ। সরকারি,বেসরকারি সকল স্থাপনার সামনেই প্রায় সময় দেখা যায় ময়লার ভাগাড়। এর ফলে নগরীতে স্বাস্থ ঝুকিঁ দিন,দিন বেড়েই চলেছে না’গঞ্জে।
১১ নভেম্বর সকালে সড়েজমিনে গেলে দেখা যায়, নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়ক, নবাব সলিমুল্লাহ সড়ক ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কেই আছে এমনই ছোট-বড় প্রায় অর্ধশতাধিক ময়লার স্পট। এই স্পটগুলোর আশেপাশে বসবাস বা চলাচলকারী মানুষদের জন্য এটি নিত্য দিনের ভোগান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারাদিন বর্জ্য জমে থাকার কারণে পুরো এলাকাজুড়ে ছড়াতে থাকে দুর্গন্ধ। এছাড়া, রাস্তায় আবর্জনা সংগ্রহের ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকার কারণে প্রায়শই সৃষ্টি হয় যানজট। যানবাহনে থাকা যাত্রীদের বাধ্য হয়েই বসে থাকতে হয় দুর্গন্ধের মধ্যে। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছে নারায়ণগঞ্জবাসী। যদি নগরীর অবস্থা এমন হয় তাহলে ৫টি উপজেলা, ৪৯টি ইউনিয়ন পরিষদ, ২টি পৌরসভা, ২৭ টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই জেলার সমগ্র বর্জ অপসারণ ও ব্যবস্থাপনা কি সঠিক ভাবে সামলানো যাচ্ছে কিনা সেই নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
নগরীর মেট্রোহল-কুমুদিনির রাস্তা দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী রবিন বলেন, ‘সকালে ময়লা নিয়ে যাওয়ার পর থেকে সারা দিন জমতে থাকে ময়লা। তাছাড়া এখানে বেলা ১১ টায়ও ময়লা নেয়ার ট্রাক রাস্তার মাঝে দাড়িয়ে থাকে এবং জ্যাম লাগে। তবে এখানে যানজটের থেকেও অসহ্যকর হচ্ছে বর্জ্যের দুর্গন্ধ। সড়ক চিকন হওয়ার কারণে সারাদিন যে ময়লাটা থাকে সেটা রিকশা-অটোর চাকায় চাকায় সারা রাস্তায় ছড়িয়ে যায়। ময়লার উপর দিয়েই বাধ্য হয়েই চলতে হয় আমাদের। বিশেষ করে বিকেলের পর ময়লা বেশি জমে তাই এ রাস্তা দিয়ে চলাচলের মতো পরিবেশ থাকে না। এই একটা সড়কের ৩-৪ টা জায়গায় ময়লা ফেলা হয়। যেমন একটা মেট্রোহলের সামনে সড়কের বিপরতি পাশে, তারপর একটু এগিয়ে আসতেই কুমুদিনির গেট ঘেসে আরেকটা জায়গায় ময়লা ফেলা হয়, আবার আরেকটু সামনে আসতেই আমলাপাড়া মোড়ে তারপর কালিরবাজার ফলের আড়তের সামনে। একটা সড়কে যদি এতো ময়লা ফেলা থাকে তাহলে সেই এলাকায় মানুষ থাকে কিভাবে। সড়কের এই অংশগুলো দম বন্ধ করে পারাপার হতে হয়।’
স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জে বর্জ ব্যবস্থাপনার বিষয়টা এতো সু-সংগঠিত না। এখানে ক্যাটাগরি অনুযায়ি বর্জ ফেলা হচ্ছে না। তবে যে পচনশীল বর্জগুলো আছে সেগুলোকে দ্রুত অপসারনের ব্যবস্থা করতে হবে। যত্রতত্র ফেলা রাখা বর্জ নারায়ণগঞ্জবাসীকে নানা বিধ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। এডিস মশা উৎপন্ন থেকে শুরু করে এই বর্জ বায়ু-মাটি-পানি দুষণ করছে এবং সেই থেকেই বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তবে এখানে শুধু সিটি কপোরেশন নয় জনগণের সচেতনেরও বিষয়টা নিয়েও কাজ করতে হবে। বর্জ ব্যবস্থাপনায় জনগণকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ও নির্দিষ্ট সময়ে ময়লা ফেলতে হবে যাতে এটা যেখানে সেখানে সারা দিন পড়ে না থাকে। এর সাথে বর্জ ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্টদেরও সচেতন হতে হবে। তারা বর্জের ক্যাটাগরি অনুযায়ি নিদিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করে দিবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বর্জ অপসারণ করতে হবে। সকলের দিক
নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরেশনের পরিছন্ন কর্মকর্তা আলমগীর হিরন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, নগরবাসীর বর্জ ব্যবস্থাপনায়ও অধিক গুরুত্ব দিয়েই আমরা কাজ করছি। এখন সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে ৯টার মধ্যেই আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ময়লা নিয়ে আসি। আমাদের সিটি কপোরেশনের তো মোট ৩ টি অঞ্চল। শুধু নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন ময়লা উৎপন্ন হচ্ছে। গৃহস্থালি ময়লা যদি যোগ করা হয় তাহলে প্রায় সেই সংখ্যা দাড়ায় ৪০০ মেট্রিক টনে। এছাড়াও কদমরসূল ও সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চল নিয়ে প্রায় ৯০০ থেকে ১০০০ মেট্রিক টন বর্জ উৎপন্ন হচ্ছে। এই বর্জ ব্যবস্থাপনায় আমাদের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। প্রতিদিনের এই বৃহৎ আকারের এই বর্জ ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত আছে ১৭ টি ময়লা বহনকারী ট্রাক ও ৫ শতাদিক পরিছন্ন কর্মী। নারায়ণগঞ্জে আমরা ছোট-বড় ৯২ টি স্পট থেকে প্রতিদিন বর্জ নেই। কিন্তু এলাকা ভিত্তিক বিভিন্ন জায়গায় যে ময়লাগুলো ফেলা হয় সেগুলো দেখা যায় ৫-৭ দিন পর এলাকার লোকেরা কাছের কোন স্পটে নিয়ে আসে বা বাসাবাড়ি থেকে যারা ময়লা নিচ্ছে তারা নিয়ে আসে। আমরা আমাদের যথাসাধ্যই চেষ্টা করছি বর্জ ব্যবস্থাপনা সঠিক ভাবে করার।