পবিত্র রমজানে দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখে যে ঈদ অনুষ্ঠিত হয়, তাকে ঈদুল ফিতর বলা হয়। ঈদ মানে খুশি। ইসলাম ধর্মের বিধানে দুটি ঈদ নির্ধারিত হয়েছে। রাসুল (সা.) যখন মদিনায় হিজরত করলেন, সেখানে দেখতে পেলেন শিশু-কিশোর, আবাল-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই বছরে দুদিন আনন্দ-উৎসব করে থাকে। সাহাবিদের মধ্যেও তেমন আবেগ-আগ্রহ পরিলক্ষিত হওয়ায় মহান আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সা.) বার্ষিক দুটি ঈদ তথা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালনের ঘোষণা দিলেন (হুজ্জাতুল্লাহিল-বালিগা)।
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাবে, যেদিন সব আত্মা-অন্তর (কেয়ামতের দিন) মারা যাবে, সেদিন তার অন্তর মরবে না। অর্থাৎ কেয়ামত দিবসের কঠিন বিপজ্জনক অবস্থা ও মহা আতঙ্কের মধ্যে যখন সবাই ভীতসন্ত্রস্ত ও মৃতপ্রায় হয়ে পড়বে তখন এই ঈদের রাতে ইবাদতকারী বরং হাসিখুশির মধ্যে কাটাবে।’ (তাবারানি)
ঈদের রাতের ফজিলত বিষয়ে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত-রাসুল (সা.) বলেন, রমজান মাসের শেষ রজনিতে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দার জন্য ক্ষমা ও দানের ফয়সালা করেন। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করেন, ওই রাতটিই কি শবে কদর? রাসুল (সা.) বলেন, না। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে কর্মচারী যখন কাজ বুঝিয়ে দেয় তখন তার পাওনাও পরিশোধ করে দেওয়া হয় (মুসনাদে আহমদ)।
রাসুল (সা.) বোঝাতে চেয়েছেন, রোজাদারের আমল এদিন শেষ হয়। আর তখন আল্লাহ তায়ালার ঘোষণামাফিক যার যা প্রতিদান তা দেওয়া হয়। তাই ঈদের রাতে তওবা, ইস্তিগফার ও ইবাদতে মশগুল থাকা চাই। এ প্রসঙ্গে ‘আল মাওসূয়াতুল ফিকহিয়া আল কুয়েতিয়া’ নামক গ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘মুস্তাহাব হচ্ছে, উভয় ঈদের রাতে আল্লাহর ইবাদত, জিকির, তেলাওয়াত ও তাসবিহ-তাহলিলে মশগুল থাকা।’